পরিচয়
অহংকার শব্দের অর্থ অহমিকা, আমিত্ব, গর্ব, দর্প, দম্ভ, বড়াই, নিজেকে বড় ভাবা ইত্যাদি । নিজেকে অন্যের তুলনায় বড় গণ্য করা এবং অন্যকে তুচ্ছ ও নিকৃষ্ট মনে করাকে অহংকার বলা হয় । যে অহংকার করে তাকে অহংকারী বলে । অহংকারী ব্যক্তি বিভিন্ন দিক থেকে নিজেকে অন্যদের উপর প্রাধান্য দেয় এবং নিজেকে অন্যদের তুলনায় উত্তম মনে করে ।
অহংকারের ধরন তিনটি
১. অন্তরে অহংকার পোষণ করা।
২. চালচলন ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অহংকার প্রকাশ করা।
৩. কথাবার্তায় অহংকার প্রকাশ করা।
মানুষ বংশ, সম্পদ, সৌন্দর্য, শক্তি, সামর্থ্য ইত্যাদি বিষয়ে অহংকার করে থাকে। যেমন ধনী ও সম্পদশালীর মধ্যে অর্থের গৌরব, স্ত্রীলোকদের মধ্যে সৌন্দর্যের বড়াই এবং ক্ষমতাবানদের মধ্যে ক্ষমতার দম্ভ, বিদ্বান লোকদের মধ্যে বিদ্যার গর্ব ইত্যাদি।
অপকারিতা
অহংকারের কুফল অনেক এবং এর অপকারিতা বর্ণনাতীত। অহংকারের কারণেই ইবলিস অভিশপ্ত হয়ে জান্নাত থেকে বিতাড়িত হয়েছে । এ সম্পর্কে মহান আল্লাহর বাণী :
“তুমি এ স্থান হতে নেমে যাও । এ স্থানে থেকে অহংকার করবে তা হতে পারে না। সুতরাং বের হয়ে যাও । নিশ্চয়ই তুমি অধমদের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা আল-আরাফ, আয়াত ১৩)
অহংকারী ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে ঘৃণিত । আল্লাহর কাছে অপছন্দণীয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
অর্থ : “নিশ্চয় আল্লাহ কোনো উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না।” (সূরা লুকমান, আয়াত ১৮)
মহানবি (স.) এ বিষয়ে বলেন,
অর্থ : “যার অন্তরে সামান্য পরিমাণ অহংকার আছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (মুসলিম)
প্রতিটি মানুষের কোনো না কোনো অভাব আছে। সুতরাং অহংকার করা তার জন্য শোভা পায় না । অহংকার শুধু তাঁরই শোভা পায়, যার কোনো অভাব নেই । রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন,
“আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, অহংকার আমার ভূষণ।” (মুসলিম)
আমরা অহংকার বর্জন করব । কেননা মানুষের কোনো জিনিস নিয়েই অহংকার করার অবকাশ নেই। আমরা এ পাঠে শিখলাম, অহংকার পতনের মূল । অহংকারী অভিশপ্ত । আমরা অহংকার করব না।
কাজ : শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কী কী কাজ করলে অহংকার প্রকাশ পায় তার একটি তালিকা তৈরি করে শিক্ষককে দেখাবে। |
আরও দেখুন...